মো. বাবর আলী : ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাজিরবেড় ইউনিয়নের ভগবতিতলা গ্রামের পুকুর থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম। ওই গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের ৪ বিঘা পুকুর ৩ বছরের লীজ নিয়ে গত এক মাস যাবত বালি উত্তোলন করছেন তিনি। এতে ফসলি জমি ও বসত বাড়িঘর ভাঙনের আশঙ্কায় উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিন পার করছেন আশেপাশের বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তারা। এলাকার পানি নিষ্কাশনের কালভাট বন্ধ করে বালির স্তুপ করা হয়েছে। এতে ঐ কালভাটের নিচ দিয়ে পানি নিষ্কাশন বন্ধ রয়েছে।
পুকুরের পাড় ঘেঁষে গোপালী খাতুনের বাড়ি। তিনি জানান, ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য শফিকুল ইসলাম এক মাস ধরে ওই পুকুর থেকে মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলন করছেন। অনেক বার নিষেধ করলেও তিনি তা শুনছেন না। স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করলে তিনি উল্টা-পাল্টা বুঝিয়ে দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর বালি উত্তোলন বন্ধে লিখিত আবেদন করেছেন। তবে স্বীল স্বাক্ষর দিয়ে অভিযোগ পত্র গ্রহণ করেও কেউই বালি উত্তোলন বন্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। একই অভিযোগ করেন পুকুরপাড়ের আব্দুর রহমান, পুরস্কার আলী, লাভলী খাতুন, খোসনেয়ারা ও মুনছুর আলী
রবিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই পুকুরে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করছেন দুই শ্রমিক। সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শ্রমিকের ফোনে ঘটনাস্থলে আসেন ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম।
শফিকুল ইসলাম জানান, ঐ পুকুরে মাটি কাটার প্রয়োজন ছিলো কিন্তু রাস্তা না থাকায় ৫ফুট করে বালি তুলে নেওয়া হচ্ছে। ঐ বালি কি করা হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সরকারি ভাবে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে ঐ ঘরে ৩০০ গাড়ি বালি লাগবে। বালি ওই ঘরে দেওয়া হবে। তবে এ কাজের কোন লিখিত অনুমতি আছে কি না ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উপরের কর্মকর্তা সবাইকে জানিয়েছি তবে লিখিত কোন অনুমতি নেই।
ইউপি চেয়ারম্যান ইয়ানবী বলেন, গৃহহীনদের ঘরে বালি দেয়ার জন্য বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। অনুমিত না নিয়ে বালি উত্তোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উপরের কর্মকর্তারা বালি তুলতে বলেছেন তবে কারো যেন অভিযোগ না থাকে এ ব্যাপার দেখতে বলেছেন। কেউ অভিযোগ দিলে বালি তোলা বন্ধ হয়ে যাবে।
স্থানীয় ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে যেয়ে বালি উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বালি তোলার পাইপ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ড্রেজার মেশিন চালু করার যন্ত্রটি নিয়ে আসা হয়। তবে আজও কিভাবে বালি উত্তোলন করছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনই বালি উত্তোলন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার রাজবংশীর ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Leave a Reply